ভার্টিগো বা মাথা ঘোরানো রোগ-কেন হয়? প্রতিকার, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা পদ্ধতি কি?

ভার্টিগো (Vertigo) সহজ কথায়, “মাথা ঘোরানো” সমস্যা। মাথা ব্যাথা বা মাথা ধরা কিন্তু নয়- মাথা ঘোরানো ফলে ভারসাম্যহীনতা অনুভব করা। এবং এটা কোন তীব্র (acute) বা তাৎক্ষনিক সমস্য নয়, এটা একটা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা (Chronic health problem)।

প্রকৃতপক্ষে ভার্টিগো (Vertigo) কোন রোগ নয়, ফলে সরাসরি ভার্টিগো কে চিকিৎসা করা যায়না। এটা অন্য রোগের উপসর্গ (Symptom)। ভার্টিগো প্রধানতঃ কান বা ব্রেইনের সমস্যা থেকে সৃষ্টি হয়।

ভার্টিগো (Vertigo) একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা হলেও এটা দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করতে পারে। ভার্টিগোতে আক্রান্ত ব্যক্তির মাথা ঘোরে, মাথা টলমল করে এবং হাঁটতে গেলে পড়ে যাওয়ার ভয় কাজ করে এবং কখনো কখনো পড়েও যায়। কখনো মনে হয় মাথাটা স্থির আছে, চারপাশটা ঘুরছে, আবার কখনো মনে হয় চারপাশ স্থির আছে মাথাটা ঘুরছে। বসা থেকে উঠলে বা উঠা থেকে বসলে বা মাথায় নড়াচা ঘটলে ঘূর্ণন বা পড়ে যাওয়ার সেনসেশন হয়, এটাই ভার্টিগো (Vertigo)।

এই পোস্টে আমরা ভার্টিগো (Vertigo) নিয়ে আপনাদের কাছে সবকিছু খোলাসা করব। যিনি এই স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত, তিনি জানেন- জীবনটা তার কাছে কতটা দুর্বিসহ। সকলের জন্য আমরা ভার্টিগো বা মাথা ঘোরা সমস্যার কারন, লক্ষণ, প্রকারভেদ, প্রতিকারের উপায়, চিকিৎসা এবং সচেতনতা নিয়ে সহজ ও ঘরোয়া ভাষায় সবকিছু clarify করব, ইনশাল্লাহ।

ভার্টিগো কী?

ভার্টিগো হল, এক কথায়- মাথা ঘোরানো সেনসেশন। হয়ত চারপাশটা ঘুরছে অথবা মাথাটা ঘুরছে। এটি কিন্তু শুধু হালকা মাথা ঝিমঝিম ভাব নয়, বরং একটি তীব্র ঘূর্ণির অনুভূতি বা ভারসাম্যহীনতার অনুভূতি। সাধারনত ঘরে চুপচাপ বসে থাকলে এই অনুভূতি অল্পই ফিল হয়। ভার্টিগো অনুভূত হয়- যখন আপনি নড়াচড়া করেন, কোন ওজন নেন বা হঠাৎ বসা থেকে উঠেন বা উঠা থেকে বসেন।

ভার্টিগো (Vertigo) হলে আপনাকে ভারসাম্যহীনতায় পেয়ে বসতে পারে। এতে আপনি দেখবেন যে, সবকিছু টলমল করছে। মনে হবে আপনার পায়ের নিচে মাটি নেই, এখনই পড়ে যাবেন। আর আপনি কিছুদূর হেঁটে যেতেও আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবেন। মনে হবে, দেহের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রন ব্রেইনের সাথে সংযুক্ত দেহের কোন অংশের তার ছিড়ে ডিসকানেক্ট হয়ে গেছে।

এবার বলুন তো, এই অবস্থা নিয়ে কি স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করা সম্ভব?

কিন্তু মনে রাখতে হবে, ভার্টিগো একটি রোগ নয়, বরং বিভিন্ন শারীরিক অবস্থার একটি উপসর্গ মাত্র।

এই অনুভূতি কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এর সাথে বমি বমি ভাব, বমি, ভারসাম্যহীনতা এবং অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

ভার্টিগো (Vertigo) একটি গুরুতর অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। তাই, ভার্টিগো সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য।

ভার্টিগো (Vertigo) কয় ধরনের হয়?

ভার্টিগোকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়-

পেরিফেরাল ভার্টিগো (Peripheral Vertigo)

সেন্ট্রাল ভার্টিগো (Central Vertigo)

পেরিফেরাল ভার্টিগো (Peripheral Vertigo)

পেরিফেরাল ভার্টিগো হল একটি কমন ভার্টিগো টাইপ। আমাদের অভ্যন্তরীণ কান বা Inner ear আমাদের ভারসাম্য রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। Inner ear এর ভারসাম্য রক্ষার অংশগুলো হল- ভেস্টিবুলার ল্যাবিরিন্থ (Vestibular Labyrinth), সেমি-সার্কুলার ক্যানাল (Semi-circular canal) অথবা ভেস্টিবুলার নার্ভ (Vestibular Nerve)। এগুলো ভেতরের কান থেকে মস্তিষ্কে ভারসাম্য রক্ষার সংকেত পাঠায়। কোন কারনে এই চ্যানেলগুলোতে ইনফেকশন বা কোন সমস্যা দেখা দিলে আমাদের ব্রেইন সঠিক সংকেত পায়না, ফলে ভার্টিগো হতে পারে।

এছাড়া অন্তঃকর্ণের একটি সমস্যা হল- মেনিয়ার্স রোগ (Ménière’s Disease) যা হলে কানের ভিতরে ঝিনঝিন শব্দ হয় এবং শ্রবণশক্তি হ্রাসের কারণ হয়- সেটাও ভার্টিগো সৃষ্টি করতে পারে।

সেন্ট্রাল ভার্টিগো (Central Vertigo)

এটি সচরাচর কম দেখা যায় এবং এটি মস্তিষ্কের সমস্যা, যেমন – ব্রেইন-স্ট্রোক, ব্রেইন টিউমার, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস (Multiple Sclerosis), ভেস্টিবুলার মাইগ্রেন (Vestibular Migraine) ইত্যাদির কারণে হতে পারে।

ভার্টিগো (Vertigo)’র অন্যান্য কারন-

উপরোক্ত দুটি সুনির্দিষ্ট কারন ছাড়াও কিছু ওষধ, যেমন- কিছু অ্যান্টিবায়োটিক, ডাইইউরেটিকস এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসাবে ভার্টিগো দেখা দিতে পারে।

ভার্টিগোর কারণ

সহজ ভাষায় ভার্টিগোর কারনগুলোকে আমরা নিচের মত করে সহজে মনে রাখতে পারি।

কানের সাথে সম্পর্কিত ভার্টিগোর কারন

বিনাইন প্যারোক্সিসমাল পজিশনাল ভার্টিগো (Benign Paroxysmal Positional Vertigo – BPPV)

মাথার অবস্থানের হঠাৎ পরিবর্তনের কারণে অভ্যন্তরীণ কানের ক্ষুদ্র ক্যালসিয়াম ক্রিস্টাল স্থানচ্যুত হলে এই সমস্যা হয়। এর ফলে স্বল্পস্থায়ী কিন্তু তীব্র মাথা ঘোরা দেখা দেয়।

মেনিয়ের’স ডিজিজ (Ménière’s Disease)

এটি অভ্যন্তরীণ কানের একটি রোগ যা কানে কম শোনা, কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ (tinnitus) সৃষ্টি করে। কানের অভ্যন্তরে তরল পদার্থের অস্বাভাবিক জমাটবদ্ধ অবস্থার কারণে এটি হতে পারে।

ভেস্টিবুলার নিউরাইটিস (Vestibular Neuritis) বা ল্যাবিরিন্থাইটিস (Labyrinthitis)

এটি অভ্যন্তরীণ কান বা ভেস্টিবুলার স্নায়ুর প্রদাহ (Inflammation) এর কারণে হয়। সাধারণত ভাইরাস সংক্রমণের ফলে এটি হয়ে থাকে। এর ফলে তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী ভার্টিগো, ভারসাম্যহীনতা এবং বমি বমি ভাব হতে পারে।

ওটোস্ক্লেরোসিস (Otosclerosis)

এটি মধ্য কানের একটি অস্বাভাবিক হাড় বৃদ্ধির রোগ যা শ্রবণশক্তি হ্রাস করে দেয় এবং কিছু ক্ষেত্রে ভার্টিগো সৃষ্টি করতে পারে।

পেরিলিম্ফ ফিস্টুলা (Perilymph Fistula)

মধ্য কান (Middle ear) এবং অভ্যন্তরীণ কান (Inner ear) এর মধ্যে অস্বাভাবিক ছিদ্র তৈরি হলে এই সমস্যা হয়, যার ফলে ভার্টিগো এবং শ্রবণজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। আঘাত, অস্ত্রোপচার বা হঠাৎ চাপের পরিবর্তনের কারণে এটি হতে পারে।

ব্রেইন এর সাথে সংশ্লিষ্ট ভার্টিগোর কারণ

স্ট্রোক (Stroke)

মস্তিষ্কের রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হলে ভার্টিগো হতে পারে। স্ট্রোকের কারণে মস্তিষ্কের ভারসাম্য রক্ষার যে কেন্দ্রটি আছে, তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ব্রেইন টিউমার (Brain Tumor)

মস্তিষ্কে টিউমার হলে ভারসাম্য রক্ষার অংশে চাপ সৃষ্টি করলে ভার্টিগো হতে পারে।

মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস (Multiple Sclerosis – MS)

এটি একটি অটোইমিউন (Autoimmune) রোগ যা মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের স্নায়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে ভার্টিগো এবং ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে।

মাইগ্রেন (Migraine)

কিছু ক্ষেত্রে মাইগ্রেন (Migraine) এর সাথে ভার্টিগোও হতে পারে, যাকে ভেস্টিবুলার মাইগ্রেন (Vestibular Migraine) বলা হয়।

ব্রেইনে আঘাত (Head Injury)

মাথায় আঘাত লাগলে ভারসাম্য রক্ষার কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভার্টিগো দেখা দিতে পারে।

কিছু ওষুধ (Certain Medications)

কিছু অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotic), অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট (Antidepressant) এবং অন্যান্য ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ভার্টিগো হতে পারে।

ভার্টিগোর লক্ষণ

ভার্টিগোর প্রধান লক্ষণ হল মাথা ঘোরা বা ঘূর্ণনের অনুভূতি। এর পাশাপাশি আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যেমন-

  1. ভারসাম্যহীনতা (Imbalance)
  2. মনে হওয়া যেন আপনি বা আপনার চারপাশের জিনিসপত্র ঘুরছে
  3. বমি বমি ভাব হওয়া
  4. বমি হওয়া
  5. অস্বাভাবিক ঘাম হওয়া
  6. চোখের অস্বাভাবিক নড়াচড়া (nystagmus)
  7. মাথা ব্যথা
  8. কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ (tinnitus) হওয়া
  9. শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া
  10. দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা
  11. কথা বলতে অসুবিধা

লক্ষণগুলির তীব্রতা এবং স্থায়িত্ব ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে।.

ভার্টিগো নির্ণয় (Diagnosis)

আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি, ভার্টিগো কোন রোগ নয়, অন্য রোগের লক্ষন বা উপসর্গ মাত্র।

ফলে ভার্টিগোর মূল কারন নির্ণয়ে আপনার ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা এবং পদ্ধতির সাহায্য নিতে পারেন, যেমন-

শারীরিক পরীক্ষা (Physical Examination)

আপনার ভার্টিগোর লক্ষণ, পূর্বের চিকিৎসা, ইতিহাস এবং অন্যান্য শারীরিক অবস্থা (Physical condition) সম্পর্কে জিজ্ঞাসার প্রয়োজন হতে পারে।

স্নায়বিক পরীক্ষা (Neurological Examination)

ভারসাম্য (Balance), সমন্বয় (Adjustment), দৃষ্টি (Vision) এবং স্নায়ুর কার্যকারিতা (Nervous functionality) পরীক্ষা করার প্রয়োজন হতে পারে।

ডিক্স-হলপাইক পরীক্ষা (Dix-Hallpike Test)

এই পরীক্ষার মাধ্যমে BPPV শনাক্ত (detect) করা হয়। রোগীকে দ্রুত শোয়ানো হয় এবং দ্রুত মাথার অবস্থান পরিবর্তন করা হয়। এভাবে দেখা হয় যে মাথা ঘুরছে কিনা এবং চোখের অস্বাভাবিক নড়াচড়া পরিলক্ষিত হচ্ছে কিনা।

ইলেকট্রোনিস্ট্যাগমোগ্রাফি (Electronystagmography – ENG) বা ভিডিওনিস্ট্যাগমোগ্রাফি (Videonystagmography – VNG)

এই পরীক্ষাগুলির মাধ্যমে চোখের নড়াচড়া (Eye-movement) রেকর্ড করা হয় এবং অভ্যন্তরীণ কানের কার্যকারিতা (Functionality) মূল্যায়ন করা হয়।

হিয়ারিং টেস্ট (Hearing Test – Audiometry)

শ্রবণশক্তি (Power of Hearing) পরীক্ষা করার জন্য এই পরীক্ষা করা হয়। বিশেষ করে মেনিয়ের’স ডিজিজ বা ল্যাবিরিন্থাইটিস সন্দেহ হলে এই পরীক্ষা করা হয়।

ইমেজিং টেস্ট (Imaging Tests)

মস্তিষ্কের গঠন দেখতে এমআরআই (MRI) বা সিটি স্ক্যান (CT Scan) করার প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে সেন্ট্রাল ভার্টিগো সন্দেহ হলে ডাক্তার এই পরীক্ষা দিতে পারেন।

রক্ত পরীক্ষা (Blood Tests)

কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণ বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা চিহ্নিত করতে রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে।

ভার্টিগোর চিকিৎসা (Treatment)

ভার্টিগোর পিছনে কি কারন রয়েছে- তার উপর নির্ভর করে তার চিকিৎসা। এক্ষেত্রে ডাক্তার যে চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন, তার কিছু সাধারণ পদ্ধতি দেখে নিন

ঔষধ (Medications)

বমি বমি ভাব এবং মাথা ঘোরা কমানোর জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ বা ঘুমের ওষুধ দিতে পারেন। মেনিয়ের’স রোগের ক্ষেত্রে ডায়ুরেটিকস (diuretics) ব্যবহার করা হয়। সংক্রমণের বা ইনফেকশনের কারণে ভার্টিগো হলে অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দিতে পারেন।

ইপ্লে ম্যানুভার (Epley Maneuver)

এটি BPPV জাতীয় ভার্টিগোর জন্য একটি বিশেষ শারীরিক কৌশলগত চিকিৎসা। এই পদ্ধতিতে মাথার নির্দিষ্ট অবস্থানে ধীরে ধীরে নড়াচড়া করানো হয় যাতে স্থানচ্যুত হয়ে যাওয়া ক্যালসিয়াম ক্রিস্টালগুলি তাদের সঠিক স্থানে ফিরে গিয়ে স্বাভাবিক অবস্থাপ্রাপ্ত হয়।

ভেস্টিবুলার রিহ্যাবিলিটেশন থেরাপি (Vestibular Rehabilitation Therapy – VRT)

এটি এক ধরনের ব্যায়াম যা মস্তিষ্কের ভারসাম্য উন্নত করতে এবং ভার্টিগোর লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে। একজন প্রশিক্ষিত থেরাপিস্টই শুধু এই ব্যায়ামগুলো শেখাতে এবং করাতে পারেন।

সার্জারি (Surgery)

কিছু গুরুতর ক্ষেত্রে, যেমন – মেনিয়ের’স ডিজিজ বা ব্রেইন টিউমারের জন্য অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন হতে পারে।

জীবনযাত্রার পরিবর্তন (Lifestyle Modifications)

কিছু ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার পরিবর্তন (Lifestyle Modification) এর মাধ্যমে ভার্টিগোর লক্ষণগুলো দূর করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা, স্ট্রেস কমানো (Stress reduction), অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন পরিহার করা এবং খুব দ্রুত মাথার অবস্থান পরিবর্তন না করা।

ভার্টিগো প্রতিরোধ

ভার্টিগো সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করা কঠিন, তবে এর ঝুঁকি কমানোর জন্য নিম্নরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।

  1. মাথার আঘাত এড়িয়ে চলা।
  2. মাথার অবস্থান দ্রুত পরিবর্তন না করা বা ধীরে ধীরে পরিবর্তন করা।
  3. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা (দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা) এবং মানসিক চাপ কমিয়ে রাখা।
  4. অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন জাতীয় দ্রব্য গ্রহ থেকে বিরত থাকা।
  5. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ ওষুধ গ্রহণ করা।
  6. মেনিয়ের’স ডিজিজ থাকলে লবণ কম খাওয়া।

কখন ডাক্তার দেখাবেন? (Doctor’s consultation)

যদি আপনার ঘন ঘন বা তীব্র মাথা ঘোরা দেখা দেয় আর যদি এর সাথে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি ও উপসর্গগুলি দেখা দেয়, তবে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন

  1. তীব্র মাথা ব্যথা
  2. দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন
  3. কথা বলতে অসুবিধা হওয়া
  4. দুর্বল বা অসাড় বোধ করা
  5. হাঁটতে অসুবিধা হওয়া
  6. বুক ধড়ফড় করা
  7. জ্ঞান হারানো

ই লক্ষণগুলি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।

শেষকথা

সাধারন মাথা ঘোরানো কে অনেকেই জীবনের অংশ হিসাবেই মেনে নেন। কিন্তু ভার্টিগো হতে পারে আপনার জীবনে একটি অস্বস্তিকর, বেদনাদায়ক এবং হতাশাজনক অভিজ্ঞতা, যা আপনার জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলতে পারে।

আপনি যদি সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নেন, উপযুক্ত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন, তাহলে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে এর লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারেন।

পোস্টটি শেয়ার করে দিন।
কমেন্ট করুন প্লিজ, আপনার কমেন্ট এপ্রিশিয়েট করা হবে।

মন্তব্য করুন