প্রশান্তির ঘুমের সীমানায় প্রবেশ করার পূর্বে ঘুম সম্পর্কিত আমাদের অন্যান্য আর্টিকেগুলোও পড়ে নিন। সারা জীবন কাজে লাগবে।
লিঙ্ক-১: ঘুমের অশান্তি থেকে প্রশান্তির পথে- মিলিয়ন ডলারের অভিযান
লিঙ্ক-২: প্রশান্তির জন্য শিখিঃ আপনার দেহঘড়ি সার্কাডিয়ান রিদ্ম কি ভুল ম্যাসেজ দিচ্ছে?
ঘুমের মূল্য লক্ষ কোটি টাকা

টাকা দিয়ে কি ঘুম কেনা যায়? যায়না। কিন্তু ঘুমের মূল্য লক্ষ কোটি টাকা। যেমন- প্রকৃতির আলো-বাতাস টাকা দিয়ে কেনা যায়না, কিনতে হয়না। কিন্তু তা অমূল্য। টাকা দিয়ে ঘুমের ট্যাবলেট কেনা যায়, ঘুমের কারনে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান করা যায়, ঘুমের অসুখের চিকিৎসা করা যায়; কিন্তু ঘুম কেনা যায়না। ট্যাবলেট খেয়ে ঘুম কখনো প্রাকৃতিক ঘুমের বিকল্প হতে পারেনা। স্লিপিং পিল ক্যান্সার, ইনফেকশন ও অন্যান্য রোগের ঝুঁকি তৈরি করে। ঘুমের অভাবে যে শারীরিক, মানসিক ও স্নায়ুবিক বিশৃংখলা ও বৈকল্য দেখা দেয়, তা ঘুমের মাধ্যমেই দূর করতে হয়।
পৃথিবীর সমস্ত চিকিৎসা একদিকে আর ঘুম একদিকে। ঘুম না হলে শরীর তার শারীরবৃত্তিয় কাজগুলো ঠিকমত করতে পারেনা, হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়, হৃদ্পিন্ড ও রক্তনালি বিশ্রাম পায়না, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি নষ্ট হয়, মস্তিষ্ক বিশ্রাম পায়না, ফলে মস্তিষ্কের সচলতা নষ্ট হয়, ইনসুলিন উৎপাদন ব্যাহত হয়, হাড় দুর্বল হয়, হযমে সমস্যা হয় এবং আরো অনেক শারীরিক মানসিক জটিলতা তৈরি হয়।
এর ফলে আপনার দেহটা প্রায় সমস্ত বড় বড় রোগ উৎপাদনের ফ্যাক্টরিতে পরিণত হয়। যেমন- ক্যান্সার, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, ব্রেইন প্রবলেম, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। পয়সাওয়ালা লোকেরা এই সমস্ত রোগ থেকে বাঁচতে লক্ষ কোটি টাকা খরচ করে। তবুও প্রশান্তির দেখা পায়না। আর আপনি এ সমস্ত কিছুর চিকিৎসা করছেন বিনামূল্যে অর্থাৎ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে।
তাহলে ঘুমের মূল্য কি লক্ষ কোটি টাকা নয়?
উন্নত ঘুমের উপকারিতা
ঘুমের উপকারিতা সম্পর্কে আমি পূর্ববর্তী পোস্টে বিস্তারিত বলেছি। আমরা এখানে কী পয়েন্টগুলো তুলে ধরব।
ঘুমের উপকারিতার কথা বলে শেষ করার মত নয়। সব বড় বড় লাইফস্টাইলজনিত রোগের ব্যাকগ্রাউন্ডে ঘুমের বিশৃংখলার ইতিহাস জড়িত। ঘুমের মাধ্যমে-
- সমস্ত দেহ এবং মস্তিষ্ক, রক্তনালি, হৃদপিন্ড পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায়, ফলে হৃদযন্ত্র ভালভাবে কাজ করে, মস্তিষ্ক শক্তিশালী হয় এবং চুপসে যাওয়ার হাত থেকে রেহাই পায়।
- ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- পেটের স্বাস্থ্য ভাল থাকে।
- দেহের টক্সিন দূর হয়, প্রদাহ কমে
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
- আহত স্থান দ্রুত রিপেয়ের হয়।
- ড্যামেজ রিপেয়ার হয়, হিলিং হয়।
- হাড় ভালভাবে গঠিত হয়, হাড় ক্ষয় রোধ হয়।
- মাংসপেশি সুগঠিত হয়।
- দুর্বলতা, ক্লান্তি, হতাশা, টেনশন দূর হয়
- শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি অনুভূত হয়।
- আরো অনেক অনেক উপকারিতা
ঘুমের বিশৃংখলার বিপদ
ঘুমের বিশৃংখলা মানে- ঘুম কম হওয়া, ঘুম তৃপ্তিদায়ক না হওয়া, ঘুম না হওয়া, অনিদ্রারোগ বা ইনসোমনিয়া রোগে ভোগা, নির্দিষ্ট সময়ে বা ঘুমের পারফেক্ট আওয়ারে না ঘুমানো ইত্যাদি।
ঘুমের বিশৃংখলার কারনে স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজকর্মে যেমন প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, তেমনি বছরের পর বছর ধরে ঘুমের ঘাটতি ও বিশৃংখলা দেহকে ঠেলে দেয় ভয়াবহ সব শারীরিক-মানসিক জটিলতা ও রোগব্যাধির দিকে। ঘুমের ডিসঅর্ডার থেকে-
- শারীরিক মানসিক অবসন্নতা ও বিষন্নতা (Depression) বৃদ্ধি পায়।
- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার এর মত রোগ চেপে বসে।
- মস্তিষ্ক কার্যক্ষমতা হারায়।
- হৃদরোগ ও রক্তনালির রোগ হয়।
- হাড় দুর্বল হয়।
- ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়।
- স্নায়ুর রোগ হয়।
- হযমের সমস্যা থেকে কোষ্টকাঠিন্য এবং IBS এর মত রোগ হয়।
- হরমোনাল ব্যালেন্স নষ্ট হওয়ার কারনে হরমোনজনিত অনেক রোগ হয়।
- বিভিন্ন মানসিক রোগ হয়।
- এছাড়াও বহু শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি হয়।
ঘুমের বিশৃংখলাঃ সভ্যতার সংকট
ঘুমের সংকটটা মূলত সভ্যতারই সংকট। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে এমনভাবে ডিজাইন করেননি যে, মানুষ লাইট জ্বালিয়ে রেখে রাতকে দিন বানিয়ে মজা করবে আর দরজা জানালা বন্ধ করে দিনকে রাত বানিয়ে ঘুমাবে।
একটা সময় ছিল (এবং এখনো আছে কোথাও কোথাও), যখন মানুষ সন্ধ্যার পরে খেয়ে দেয়ে নামায পড়ার থাকলে নামায পড়ে ঘুমিয়ে পড়ত, আবার ভোরে উঠে কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিত। আল্লাহ তায়ালাও বলেছেন, তিনি মানুষকে শ্রমনির্ভর করে সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং মানুষের না ঘুমিয়ে অযথা নষ্ট করার মত সময় তার নেই। এটাই মানুষের স্বাভাবিক ইতিহাস।
কিন্তু সভ্যতার অগ্রগতিতে মানুষ বিদ্যুত পেয়েছে, পেয়েছে ক্রত্রিম বিনোদনের এমন ব্যবস্থা যা সে নিজেও চায়নি। মানুষ এখন ঘুমের মাঝে প্রশান্তির অনুসন্ধান না করে টিভি/কম্পিউটার স্ক্রিনে তাকিয়ে শান্তির সন্ধানে রাত পার করে। তাতে শুধু ভোগ হয়, শান্তি আসেনা। ভোগের আগুনে দগ্ধ অস্থির হৃদয় শান্তির আশায় দিনরাত রুদ্ধশ্বাসে ছুটে বেড়ায় টাকার পিছনে। ঘুমানোর সময় তার নেই।
কিভাবে ঘুমাবেন প্রশান্তির ঘুম?
নিয়মিত ঘুমের ভারসাম্য বজায় রাখাই কঠিন, তার উপর আবার প্রশান্তির ঘুম। অনেক কঠিন। কিন্তু কঠিন কাজের লক্ষ অর্জিত হয়ে গেলে সেটা আর কঠিন থাকেন। প্রশান্তির ঘুম ঘুমানোর একটাই পলিসি, একটাই নীতি, সেটা কি? সেটা হল- চ্যালেঞ্জ নেওয়া অর্থাৎ ঘুমের বিশৃংখলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করা। এবং সেই যুদ্ধে বিজয় ছিনিয়ে আনা। আপানার যদি দীর্ঘমেয়াদি ঘুমের ডিসঅর্ডার থাকে, তাহলে সেটা একদিনে হয়নি। বছরের পর বছর সময় লেগেছে। সুতরাং সেই বিশৃংখলা মেরামত হতেও সময় লাগবে।
প্রশ্নঃ এখন প্রশ্ন হল- প্রশান্তির ঘুম মানে কি?
উত্তরঃ প্রশান্তির ঘুম হল ডেল্টা লেভেল ডীপ স্লীপ (Delta level deep sleep) বা স্বপ্নবিহীন গভীর ঘুম। এ ঘুমে শরীর ও মন পূর্ণাঙ্গ শিথিল থাকে। ঘুমের সময় আর জেগে উঠার সময়ের মধ্যে কোন পার্থক্যই মনে থাকেনা। এ ঘুমে দেহের জন্য উপকারী সমস্ত শারীরবৃত্তীয় কাজগুলো চলে, লিভিং অরগানিজ্মগুলো ঠিকমত কাজ করে, দেহটা পূর্ণাঙ্গ বিশ্রামের প্রশান্তি ও সুখ পায়। ঘুমের পর দেহে চনমনে ভাব সৃষ্টি হয় ও কর্মোদ্দীপনায় ভরে উঠে।
প্রশান্তির ঘুমের ক্ষেত্রে আমরা তিনটি বিষয় বিবেচনায় রাখব-
ঘুমের নির্ধারিত সময়
ঘুমের পরিমান
ঘুমের কোয়ালিটি
➽ ঘুমের নির্ধারিত সময়
সাধারন কথায়-সাধারন ভাষায়, এশার নামাযের পর পর বা ৯ টা থেকে ১০ টার মধ্যে আগে আগে ঘুমিয়ে পড়া এবং ফজরের নামাযের সময় বা ভোরে জেগে উঠা- এটাই হল ঘুমের নির্ধারিত সময়।
বৈজ্ঞানিক তথ্য ব্যবহার করে আমরা বলতে পারি, রাত ১০ টা থেকে ২ টার মধ্যে দেহের মধ্যে মেলাটোনিন (Melatonine) বেশি নিঃসৃত হয়। রাত ২ টার পরে স্টেরয়েড (Steroid) হরমোন আসে ঘুম থেকে জাগানোর জন্য। মেলাটোনিন হল ঘুমের গভীরে ডুবিয়ে দেওয়ার হরমোন। সুতরাং রাত ১০ টা থেকে ২ টা- এ সময়ের ঘুমটা অত্যন্ত জরুরী। সেই লক্ষে আপনি ৯ টা থেকে ১০ টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়বেন।
➽ ঘুমের পরিমান
একজন পূর্নবয়স্ক সুস্থ মানুষের ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। যদি কখনো নির্ধারিত সময়ের মধ্য ঘুমের টার্গেট পূর্ণ না হয়, তবে দিনের বেলায় ২/১ ঘন্টা ঘুমিয়ে নেওয়া যায়। তবে কোন ক্রমেই ফজরের পর ঘুমানো নয়।
➽ ঘুমের কোয়ালিটি
ঘুমের কোয়ালিটি হবে উন্নত। ঘুমের সময় চোখের পাতা বেশি নড়াচড়া করবেনা। ঘুম স্বপ্ন দ্বারা আক্রান্ত হবেনা অর্থাৎ স্বপ্নবিহীন গভীর ঘুম হবে। ঘুম থেকে জাগার পর সমস্ত দেহ-মন শিথিল থাকবে। মাথা গরম থাকবেনা, প্রশান্ত থাকবে।
যু-যুগান্তের অভ্যাসের প্যাটার্ন ভেঙ্গে প্রশান্তির ঘুমের সমাধান
এমন হতে পারে যে, আপনি বছরের পর বছর ধরে, ২০/৩০/৪০ বছর ধরে ঘুমের ঘাটতি বয়ে বেড়াচ্ছেন, অথচ আপনি তা বুঝতে পারছেননা। এমন কি ঘুমের কারনে দেহের মধ্যে যে অসুখ ও জটিলতা বাধিয়ে বসে আছেন, তাও বুঝতে পারছেননা। কারন ঘুমের এই অবস্থাকে আপনি স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিয়েছেন। ডাক্তারও আপনাকে কখনো বলেননি দীর্ঘমেয়াদী ঘুমের ঘাটতির পূরনের কথা।
এখন আপনি যদি আমাদের উপরোক্ত আলোচনা থেকে ঘুমের উপকারিতা এবং ঘুমের বিশৃংখলার ভয়ংকর ক্ষতির কথা শিখে থাকেন এবং ঘুমের ডিসঅর্ডারকে কারেক্ট করা প্রয়োজন বলে উপলদ্ধি করে থাকেন, তবে আজ থেকেই চ্যালেঞ্জ নিন। আমাদের নিয়মগুলো মেনে যুগ-যুগান্তের কুঅভ্যাসের প্যাটার্ন বা ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসুন। ফিরে আসুন প্রশান্তিময় ঘুমের অভ্যাসে। পালটে দিন জীবনকে।
প্রিয় পাঠক, এক্ষেত্রে আমরা আমাদের সকলের প্রিয় ডাক্তার জাহাঙ্গীর কবিরের পরামর্শকেই সাদরে গ্রহন করব। কারন তিনি ঘুমের সঠিক ধারায় ফিরে আসতে বা সার্কাডিয়ান রিদ্ম বা ঘুম জাগরন চক্র ঠিক করতে, তিনি যে পরামর্শ দিয়েছেন, তা একেবারেই প্রাকৃতিক এবং অব্যর্থ। আপনিও তা অনুসরন করুন এবং লেগে থাকুন। সফলতা আসবেই। ডাঃ জাহাঙ্গীর কবিরের লক্ষ লক্ষ অনুসারীরাই তার প্রমান। প্রমান আমি নিজেও।
ঘুমের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডাঃ জাহাঙ্গীর কবিরের পদ্ধতি
আপনি জোর করে ইচ্ছাকৃতভাবে ঘুমাতে পারেননা, কিন্তু আপনি জোর করে জাগতে পারেন। এখানে আপনার ইচ্ছাশক্তিকে ব্যবহার করুন। এলার্ম ঘড়ির সাহায্য নিন। ভোরে উঠে যান, রাত্রে যত ঘন্টাই ঘুম হোক বা ঘুমের অতৃপ্তি থাকুক।
🔻
ভোরে উঠে আর ঘুমাবেননা, যতই ঘুমে ধরুক। দেহের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ নিন। দেহের ক্ষুধাকে ধৈর্য্যের সাথে মোকাবেলা করুন। এটা সব সময়ের জন্য নয়, অভ্যাস বদলের জন্য। দিনেও ঘুমাবেননা। বড়জোর একমাসের জন্য। কিন্তু আপনি যদি লেগে থাকেন, প্রতিদিনই পূর্বের দিনের চেয়ে কিছুটা সহজ মনে হবে।
🔻
এভাবে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভোরের পরে জেগে থাকলে হবে কি- আগে আগে ঘুম আসবে। যদি আপনার ১২ টা বা ১ টায় ঘুম আসার অভ্যাস প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে, তাহলে এই নির্ধারিত সময় এগিয়ে আসবে। এবং এক সময় আপনি নির্দিষ্ট সময় বা ১০ টায়ই ঘুমাতে সক্ষম হবেন।
🔻
শুধু ভোরে উঠা নয়, ভোরে উঠে বাইরে প্রকৃতির সান্নিধ্যে যেতে হবে, হাঁটতে যেতে হবে। ব্যায়াম করতে হবে সকালেই। এটা এজন্য যে, সকালের হাঁটা এবং ব্যায়াম দেহকে দীর্ঘসময় ব্যাপী ক্লান্ত রাখবে। রাত্রে আগে আগে ঘুমানোর জন্য দেহকে প্রস্তুত করবে। বিকালের দিকে ব্যায়াম করলে এই উপকার পাবেননা।
🔻
১০ টায় বেডে যাওয়ার পর যদি আধা ঘন্টার মধ্যেও ঘুম না আসে, তবে কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে পারেন।
নিঃশ্বাসের ব্যায়াম করুন: ঘুম না আসা পর্যন্ত নিঃশ্বাসের ব্যায়াম- ৪,৭,৮ ব্রেদিং (4,7,8 Breathing) ক্রমাগত করতে থাকুন। এটা হল- ৪ বার বা ৪ সেকেন্ডে নিঃশ্বাস সম্পূর্ণ টেনে নিন, ৭ বার বা ৭ সে্কেন্ড আটকে রাখুন, ৮ বারে বা ৮ সেকেন্ডে ছাড়ুন। এভাবে চালিয়ে যান। দেহটাকে শিথিল করতে এটা প্রয়োজন। আপনার অন্যান্য নিঃশ্বাসের ব্যা্যামের রুটিন থাকলে অন্য সময় না করে, এই সময় করতে পারেন।
অজিফা বা জিকির করুন: আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন, তবে দীর্ঘ সময় নিয়ে অজিফা বা জিকির করতে পারেন। এভাবে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। এক্ষেত্রে মনের সাথে একটু চালাকি করুন। যেমন- দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞা করুন, আজ রাতে আমি ১০,০০০ বার আলহামদুলিল্লাহ না পড়ে ঘুমাবনা। প্রতিজ্ঞা মত কাজ করতে থাকুন। দেখবেন, কয়েক শত বার পড়ার পরেই ঘুম এসে যাবে।
উল্টো গণনা করুন: যেমন- আপনি ১০০০ থেকে উল্টোভাবে অর্থাৎ ১০০০, ৯৯৯, ৯৯৮, ৯৯৭, ৯৯৬ ….. এভাবে গণনা করতে থাকুন। দেখবেন এক সময় ঘুম চলে আসবে।
🔻
আপনার সার্বিক ঘুম অভিযানের অংশ হিসাবে হট শাওয়ার নিতে পারেন, বিশেষত শুতে যাওয়ার আধা ঘন্টা আগে। হট শাওয়ার মানে গরম পানিতে গোছল করা। এটা করলে আপনার উত্তেজিত স্নায়ুগুলো বশীভূত হবে, যা ঘুমের ভাব আনতে সাহায্য করবে।
🔻
সার্বিকভাবে দুশিন্তা দূর করতে হবে। আপনার কাজের চাপকে বাহ্যিকভাবে এবং মানসিকভাবে ম্যানেজ করার পদ্ধতি আবিষ্কার করুন এবং স্ট্রেস থেকে বেরিয়ে আসতে টেকসই পদক্ষেপ নিন। দুশ্চিন্তা কাজ করলে ঘুম আসবেনা। ঘুম আসলেও গভীর হবেনা।
এভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকলে, নিশ্চয়ই সফলতা আসবে, ইনশাল্লাহ।